,

হুমকির মুখে কৃষি উৎপাদন, নবীগঞ্জে ফসলি জমির থেকে মাটি উত্তোলন ॥ কমছে কৃষি জমি

মোঃ নূরুজ্জামান ফারুকী ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রভাবশালীরা নির্বিঘ্নে ফসলি উর্বর কৃষি জমি নষ্ট করে ব্যাপক হারে মাটি উত্তোলন করছে। এতে হাজার হাজার হেক্টর দু’ফসলি কৃষি জমি থেকে উর্বর মাটি কেটে নেয়ায় হচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। এসব ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার পর তা পরিবহনের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি বোঝাই যন্ত্রদানব ট্রাক্টর ও ট্রাক চলাচল করার কারণে রাস্তায় মাটি পড়ে তা অন্যান্য যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। আর সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি জমির উর্বর মাটি ৬ ইঞ্চি পরিমাণ গভীরতা চাষাবাদ উপযোগী। এই মাটি সরিয়ে ফেলা হলে পরের ৪-৫ বছর এ জমিতে ভালো ফসল হয় না। প্রচুর গোবর ও জৈবসার দিয়ে মাটিকে উৎপাদনের উপযোগী করতে কোন কোন ক্ষেত্রে আট দশ বছর লেগে যায়। যা শুধু কৃষকেরই ক্ষতি হচ্ছে না এতে গোটা দেশের কৃষিজ উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে যা অপূরনীয়। এই জমিকে উপযোগী করতে প্রচুরপরিমাণ কৃত্রিম ও জৈবসার জমিতে দিতে হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার , সদর, ইনাতগঞ্জ, আউশকান্দি, হালিতলা, গন্ধাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের এলাকা হইতে কৃষি জমি কেটে মাটি নেয়া হচ্ছে। এইসব মাটি ট্রাক ও ট্রাষ্টর বুঝাই করে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে দিন দিন কমে আসছে আবাদি জমি। বিশেষ করে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করায় খাদ্য ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। নবীগঞ্জ পৌরসভার মদনপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, উঁচু ফসলের জমিতে পানি না উঠায় আমাদের ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া আমরা জানতাম না মাটি কাটলে ফসলে উর্বরতা কমে। আজ জানলাম আর কোন দিন জমির মাটি বিক্রয় করব না। উপজেলার গন্ধা গ্রামের কৃষক কাজল মিয়া জানান, আমাদের এলাকায় যেসব জমি উচু, পানি থাকে না সেসব জমি কেটে মাটি বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করা হয়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের জমি থেকে যারা মাটি কেটে নেন তারা পরবর্তীতে আমাদের জৈবসার গোবর ও নানা ধরণের সার দিয়ে সহায়তা করেন। মাটি কেটে নেয়ার ফলে জমির উর্বরতার যে ঘাটতি হয় তা গোবর ও সারে পূর্ণ হয়ে যায়। তিনি ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে নেয়ায় ফসলী জমির যে উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে তা জানেন না বলে জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষি জমির উর্বর মাটি ৬ ইঞ্চি পরিমাণ গভীরতা হলে। এই জমিতে প্রচুর গোবর ও জৈবসার দিয়ে মাটিকে উৎপাদনের উপযোগী করতে আট দশ বছর লেগে যায়। যা শুধু কৃষকেরই ক্ষতি হচ্ছে না এতে গোটা দেশের কৃষিজ উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে যা অপূরনীয়। এই জমিকে উপযোগী করতে প্রচুর পরিমাণ কৃত্রিম ও জৈবসার জমিতে দিতে হয়। কৃষকদের সাথে আমরা মাঠ পর্যায়ে এবিষয়ে আলোচনা করে থাকি।


     এই বিভাগের আরো খবর